বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
প্রচ্ছদ্ধআন্তর্জাতিকবাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনে ১৪০০ জনের বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে

বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনে ১৪০০ জনের বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে

spot_img
spot_img

বাংলাদেশে গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন সাবেক সরকারের দমন-পীড়নের বিষয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। এছাড়া, বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনের সময় তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা প্রাণ হারান।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং ক্ষমতাসীন দলের সহিংস উপাদানগুলো ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে পদ্ধতিগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দমন করার জন্য একটি সুসংগঠিত নীতি অনুসরণ করা হয়। এতে ব্যাপক সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং জরুরিভাবে আরও ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের এই ধরনের তদন্ত এটাই প্রথম। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে, ওই সময়কালে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিদ্ধ হন। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পর। তবে এর মূল কারণ হিসেবে প্রশাসনের দুর্নীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতায় থাকার জন্য সাবেক সরকার ধারাবাহিকভাবে সহিংস পন্থা অবলম্বন করে বিক্ষোভ দমন করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “এই নৃশংস দমন-পীড়ন ছিল সাবেক সরকারের সুপরিকল্পিত কৌশল, যা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জনতার বিরোধিতাকে নির্মমভাবে প্রতিহত করেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংগ্রহ করা সাক্ষ্য-প্রমাণ রাষ্ট্রীয় সহিংসতার ভয়াবহ রূপ তুলে ধরছে, যা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল হতে পারে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।”

আরো পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -

সর্বাধিক পাঠিত