রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
প্রচ্ছদ্ধঅর্থনীতিনতুন ডিজাইনের টাকা আসছে, থাকবে ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’

নতুন ডিজাইনের টাকা আসছে, থাকবে ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’

spot_img
spot_img

আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসছে নতুন ডিজাইনের টাকা। নতুন নোটে থাকবে না শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। এর পরিবর্তে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করছে সরকার। আপাতত এই চার ধরনের নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সব টাকার নোট থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে।

এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে  নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, নতুন টাকা ছাপার বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করি আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন টাকা।

টাকশালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন শুধু টেন্ডার বাকি। টেন্ডারের কাজটা শেষ হয়ে গেলেই নতুন টাকা বাজারে চলে আসতে সময় লাগবে না। এই মুহূর্তে টাকা ছাপা বন্ধ রেখেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী আবার ছাপা শুরু হবে।

যেভাবে ছাপা হয় নতুন নোট

বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। ওই বছরের নভেম্বর মাসে ১০ টাকার নোটও ছাপানো হয় সেখানে। প্রতিটি নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। সেজন্য দরপত্র ডেকে চিত্র শিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা করানো হয়।

নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল।

বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় টাকা ছাপায় না। সাধারণত একটি নোট ৪ থেকে ৫ বছর চলে। এরপর তা পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ছোট মানের নোট বেশি হাতবদল হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়।

বছরের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা মুদ্রণ বা উৎপাদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রেখে দেওয়া হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বাজারে ছাড়া হয়, তখনই তা মুদ্রা বা টাকায় পরিণত হয়। তার আগে সেটা টাকা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি সার্কুলেশন প্রতিবেদনে যোগ করা হয় না।

বর্তমানে বাংলাদেশের ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোট প্রচলন আছে। এর মধ্যে ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আছে। কোনো কোনো নোটের দুপাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এ ছাড়া ধাতব মুদ্রাগুলোতেও তার ছবি আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপাতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সর্বশেষ নতুন নকশায় ২০০ টাকার নোট চালু হয় ২০২০ সালে। ওই নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিতে নতুন রূপ দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -spot_img

সর্বাধিক পাঠিত