চট্টগ্রামের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের সাংস্কৃতিক মঞ্চে ইসলামি গান পরিবেশনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়ে। তবে গ্রেপ্তার হওয়ার ব্যক্তির নাম পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
শুক্রবার সকালে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ বলেন, পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আজ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে।
এই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে জানিয়ে তারেক আজিজ বলেন, মামলার আসামিদের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। সংগঠনটির সদস্যরা শাহ আবদুল করিমের বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’ গানটির খণ্ডাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে সংগঠনটি মঞ্চে গান পরিবেশনন করে।সংগঠনটি জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে রাতে সজল দত্তকে কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ঘটনার পর পরই জেএম সেন হল পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তারা যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। রাতের মধ্যেই তাদের নামে মামলা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
অনুষ্ঠান পরিচালনায় যারা চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমিকে মঞ্চে ডেকেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এদিকে, এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছে সংগঠনটি। পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছে ছাত্রশিবির।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানায় ছাত্রশিবির। ওই পূজামণ্ডপে আমাদের কেউ যায়নি। তাই চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলতে পারি, এর সঙ্গে শিবির জড়িত নয়।