বুধবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরের কাছে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, “আজ রাতে ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরের কাছে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং আরও তথ্য জানাতে কাজ করছি।”
মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের প্রধান পামেলা স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুলিশের ধারণা, হামলাটি একজন একক সন্দেহভাজন ব্যক্তি করেছে, যিনি এখন হেফাজতে আছেন। তিনি বলেন, “গুলি চালানোর আগে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জাদুঘরের বাইরে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এরপর সে চারজনের একটি দলের কাছে গিয়ে বন্দুক বের করে গুলি চালায়, যাতে আমাদের দুই নিহত ব্যক্তি আহত হন।”
গুলি চালানোর পর সন্দেহভাজন ব্যক্তি জাদুঘরে প্রবেশ করে এবং ইভেন্টের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করে। স্মিথ জানান, হেফাজতে থাকাকালীন সন্দেহভাজন ব্যক্তি “ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন” স্লোগান দিয়েছে।
ইসরায়েলের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লেইটার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহতরা ছিলেন “বাগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন এক তরুণ যুগল।” তিনি জানান, “এক তরুণ এই সপ্তাহে একটি আংটি কিনেছিল, পরের সপ্তাহে জেরুজালেমে তার বান্ধবীকে প্রস্তাব দেওয়ার ইচ্ছা নিয়ে।”
ইসরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র তাল নাইম কোহেন এক বিবৃতিতে বলেন, জাদুঘরে একটি ইহুদি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় দুই কর্মীকে “কাছ থেকে” গুলি করা হয়। দূতাবাসের একজন মুখপাত্র সিএনএন-কে জানান, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না এবং গুলির সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, তিনি এবং ডিসির ভারপ্রাপ্ত ইউএস অ্যাটর্নি জিনাইন পিরো ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরের বাইরে গুলির ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
আমেরিকান ইহুদি কমিটির সিইও টেড ডয়েচ বলেন, তার সংগঠন বুধবার সন্ধ্যায় জাদুঘরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “এই স্থানের বাইরে এমন অকল্পনীয় সহিংসতার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এই মুহূর্তে, পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তথ্যের অপেক্ষায়, আমাদের পূর্ণ মনোযোগ ও হৃদয় কেবল আহতদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “ডিসির এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড, যা স্পষ্টতই ইহুদি-বিদ্বেষের কারণে ঘটেছে, এখনই বন্ধ হওয়া উচিত! আমেরিকায় ঘৃণা ও উগ্রবাদের কোনো স্থান নেই। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।”
জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বুধবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতিক্রিয়ায় এক্স-এ এক বিবৃতিতে বলেন, “ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরে অনুষ্ঠানের বাইরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক গুলির ঘটনা, যেখানে ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীরাও আহত হয়েছেন, তা ইহুদি-বিদ্বেষী সন্ত্রাসের একটি জঘন্য কাজ।”
