ঐতিহাসিক রেকর্ড, ২৮তম বার এভারেস্ট জয় কামি রিতার, একসপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার


কাঠমান্ডু: নয় নয় করে জীবনের ৫০টি বসন্ত পার করে ফেলেছেন। কিন্তু উদ্যমে ভাঁটা পড়েনি এতটুকু। তাই একবার বা দু’বার নয়, ২৮তম বার এভারেস্টের শৃঙ্গ ছুঁয়ে নজির গড়লেন কামি রিতা শেরপা। এতবার এভারেস্ট আরোহণের নজির নেই বিশ্বের আর আরও। শুধু তাই নয়, এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এভারেস্টের শৃঙ্গ ছুঁলেন কামি রিতা, গত ১৭ মে ২৭তম বার এভারেস্টের শৃঙ্গ ছুঁয়েছিলেন তিনি। আর চলতি বছরে এই নিয়ে ১১ বার এভারেস্ট জয় করলেন তিনি। 

কামি রিতার বয়স ৫৩ বছর। নেপালের বাসিন্দা তিনি। শৈলশিরার দক্ষিণ-পূর্ব হয়ে, ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার পথ বেয়ে, তিনি এভারেস্টের মাথায় পৌঁছন। ২৮তম বার তাঁর এভারেস্ট জয়ের খবর জানিয়েছেন নেপালের পর্যটন আধিকারিক বিজ্ঞান কৈরালা। ৫৩ বছর বয়সেও কামি রিতা অপ্রতিরোধ্য বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান। 

শৈলশিরার দক্ষিণ-পূর্ব হয়ে, যে রাস্তা ধরে আবারও এভারেস্ট জয় করলেন কামি রিতা, তেনজিং নোরগে এবং নিউজিল্যন্ডের স্যর এডমন্ড হিলারিও ১৯৫৩ সালে ওই পথ ধরেই এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছন। পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গে পৌঁছতে ওই পথ আজও প্রথম পছন্দ পর্বতারোহীদের কাছে। এভারেস্ট জয়ের পর নামতেও শুরু করে দিয়েছেন কামি রিতা। 

সেভেন সামিট ট্রেকস সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার থানেশ্বর গুরাগাই জানিয়েছেন, নীচে নামতে শুরু করেছেন কামি রিতা। থানেশ্বরের অধীনেই গাইডের চাকরি করেন কামি রিতা। থানেশ্বর জানিয়েছেন, পর্বতারোহণ কামি রিতার কাছে নেশার মতো। কামি রিতার সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন এভারেস্টে উঠেছিলেন। তাঁরাও নেমে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। 

১৯৯৪ সালে প্রথম বার এভারেস্ট জয় করেন কামি রিতা। তার পর থেকে কোনও বছর এভারেস্ট আরোহণ বাদ দেননি তিনি। মাঝে তিন বছর শুধু বিরতি নিতে হয়েছিল তাঁকে, তা যদিও কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধের কারণে। একাধিক কারণে ওই তিন বার এভারেস্টে আরোহণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেভেন সামিট ট্রেকস সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অল্প বয়স থেকেই পর্বতারোহণ আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায় কামি রিতার কাছে। বিগত দুই দশক ধরে পর্বত জয় করে আসছেন তিনি। 

এই মুহূর্তে সর্বাধিক বার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড কামি রিতার দখলে। কিন্তু রেকর্ড গড়াই শুধুমাত্র তাঁর লক্ষ্য নয় বলে সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে লেখেন কামি রিতা। তিনি লেখেন, ‘আজকাল লাগাতার রেকর্ড ভাঙছে। অনেকে ভাবেন রেকর্ড ভাঙাই আসল লক্ষ্য। কিন্তু গোড়া থেকেই  রেকর্ড গড়ার কোনও আকাঙ্খাই ছিল না আমার। পেট চালানোর দায় ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা নেশা হয়ে দাঁড়ায়। আমি স্রোতে গা ভাসিয়ে দিই। ইতিহাস গড়ছি বলে কখনও মাথাতেই আসেনি। এতকিছুর পরও বার বার পর্বতারোহণে যেতে চাই’।

পর্বতারোহণের জিগির যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এ বছরই নেপালের পর্যটন বিভাগের তরফে এভারেস্ট আরোহণে অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৪৭৮ জনকে,  এখনও পর্যন্ত যা সর্বাধিক। এর আগে, ২০২১ সালে ৪০৯ জনকে এভারেস্টে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়। এভারেস্ট আরোহণের ক্ষেত্রে অনুমতি জোগাড়েই বিদেশি নাগরিকদের ১১ হাজার ডলার ফি দিতে হয়। সবমিলিয়ে খরচ হয় ৪০ থেকে ৯০ হাজার ডলার। তেনজিং নোরগে এবং এডমন্ড হিলারির দেখানো পথে আজ পর্যন্ত নেপালের দিক থেকে  ৭ হাজার পর্বতারোহী এভারেস্ট জয় করেছেন।

Source link

Read also  Russia Summons Germany, Sweden, Denmark – News18 Bangla