IPL 2023 Qualifier 2: প্লে-অফে অন্যতম বড় মার্জিনে জিতে CSK আর MI-এর সঙ্গে এলিট গ্রুপে যুক্ত হল GT
শুভমন গিলের ঝড়ে একের পর এক নামীদামী টিম খড়কুটোর মতোই উড়ে যাচ্ছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে কোহলিদের ছিটকে দিয়েছিলেন আইপিএলের গ্রুপ পর্ব থেকে। আর শুক্রবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে শতরান করে কোয়ালিফায়ার টু থেকেই বিদায় দিলেন রোহিত শর্মাদের। শুভমনের তেজেই হাসতে হাসতে ফাইনালে উঠল টাইটান্স। সেই সঙ্গেই তারা করে ফেলল একাধিক নজির।
শুক্রবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রোহিতদের ৬২ রানে হারিয়ে নজির গড়ল টাইটান্স। আইপিএলের প্লে-অফে সবচেয়ে বেশি রানে জয়ের নজিরের তালিকায় নাম লেখাল হার্দিক পাণ্ডিয়ার টিম। এই তালিকায় পাঁচ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে তারা। তালিকার শীর্ষে রয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তারা ২০০৮ আইপিএলের সেমিফাইনালে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১০৫ রানে হারিয়েছিল। ২০১২ সালে কোয়ালিফায়ার-টু-তে চেন্নাই সুপার সিং দিল্লির টিমকেই ৮৬ রানে হারিয়েছিল। ২০২৩ এলিমিনেটরে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৮১ রানে হারায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ২০১৫ এলিমিনেটরে রাজস্থানকে ৭১ রানে হারিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। এর পরেই রয়েছে এ দিনের ম্যাচে টাইটান্সের সাফল্য।
আরও পড়ুন: শুভমনের শতরানের পর শুভেচ্ছা রোহিতের, হার্দিকের উচ্ছ্বাস, GT-র স্ট্যান্ডিং ওভেশন
শুক্রবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন পঞ্জাবের ক্রিকেটার। ৬০ বলে ১২৯ রান করেন শুভমন গিল। বিধ্বংসী ইনিংস সাজানো ১০টি ছক্কা এবং ৭টি চারে। শুভমনের দাপটে প্রথমে ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রান তোলে গুজরাট। জবাবে ১৮.২ ওভারে ১৭১ রানে অলআউট হয়ে যায় মুম্বই। আরও একবার আইপিএলের ফাইনালে গুজরাট। অভিষেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দ্বিতীয় বছরও ট্রফির হাতছানি হার্দিকদের সামনে। এই নিয়ে পরপর দুই বছর আইপিএলের ফাইনালে উঠেও নজির গড়ে ফেলল টাইটান্স। তারা নাম লেখাল চেন্নাই সুপার কিংস এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এভিজাত গ্রুপে। চেন্নাই এবং মুম্বইয়ের পর তৃতীয় দল হিসেবে পরপর দু’বার আইপিএলের ফাইনালে ওঠার নজির গড়ল গুজরাট টাইটান্স। এবার চ্যাম্পিয়ন হলে ষোলকলা পূর্ণ হবে।
দিনটাই ছিল শুভমনের। দুর্ধর্ষ ব্যাটিং। সতর্কতার মোড়কে শুরু করেন। ৩২ বলে অর্ধশতরান করেন। তারপরই খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন। পরের ১৭ বলে চলল তাণ্ডব। ৪৯ বলে একশোয় পৌঁছে যান শুভমন। বৃষ্টি থামলেও বাইশ গজে ঝড় তোলেন গিল। অসাধারণ ব্যাটিং। মুম্বইয়ের কোনও বোলারকেই রেয়াত করেননি। ১২তম ওভারে মুম্বইয়ের আগের দিনের নায়ক আকাশ মাধওয়ালকে তিনটে ছক্কা হাঁকিয়ে অশনি সঙ্কেত দেন। তারপর পীযুষ চাওলা, ক্রিস জর্ডন, সবাইকেই নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং। টি-টোয়েন্টিতে এটাই শুভমনের সেরা ইনিংস। তবে ৩০ রানে আউট হতে পারতেন শুভমন গিল। কিন্তু জর্ডনের বলে ক্যাচ ফস্কান টিম ডেভিড। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে য়ায়। তারই খেসারত দিতে হয় মুম্বইকে। এ ছাড়া ৩১ বলে ৪৩ করেন সাই সুদর্শন। শেষদিকে দু’টি ছয় এবং চারের সাহায্যে ১৩ বলে গুরুত্বপূর্ণ ২৮ রান যোগ করেন হার্দিক।
আরও পড়ুন: জর্ডনের কনুইয়ের গুঁতোয় মাঠ ছাড়লেন কিপার ইশান, বাঁ-চোখে চোটের জেরে করলেন না ওপেনও- ভিডিয়ো
এ দিন টাইটান্সের ইনিংসের ১৭তম ওভারের আগে জর্ডনের কনুইয়ে লেগে চোখে চোট পান ইশান কিষাণ। চোটের জেরে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। ব্যাট করতেও নামেননি তিনি। যার ফলে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করেন নেহাল ওয়াধেরা। কিন্তু রান পাননি। মাত্র ৪ রানে ফেরেন। এদিন কোনও কিছুই মুম্বইয়ের পক্ষে যায়নি। দ্বিতীয় ওভারে হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ক্যামেরন গ্রিন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নামেন সূর্যকুমার। দলের এই শোচনীয় অবস্থায় অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলা উচিত ছিল রোহিতের। কিন্তু মাত্র ৮ রান করে আউট হন। ২.২ ওভারে ২১ রানে ২ উইকেট হারায় মুম্বই। তিলক বর্মার ইনিংস দলকে কিছুটা লড়াইয়ে ফেরায়। মহম্মদ শামির ওভারে ২৪ রান নেন বাঁ হাতি ব্যাটার। কিন্তু পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে রশিদকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বোল্ড হন। ৩টি ছয়, ৫টি চারের সাহায্যে ১৪ বলে ৪৩ রান করেন তিলক।
পরে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ উইকেটে সূর্যকুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৫২ রান যোগ করেন গ্রিন। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। ২০ বলে ৩০ রান করে আউট হন অজি। এখানেই প্রায় শেষ। তবুও একাই লড়ছিলেন সূর্যকুমার। স্কাই শেষ ভরসা ছিল। কিন্তু ৩৮ বলে ৬১ রান করে বোল্ড হতেই ফাইনালের স্বপ্নে জলাঞ্জলি। বিষ্ণু বিনোদ (৫), টিম ডেভিড (২) রান পাননি। ২.২ ওভার বল করে ১০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন মোহিত শর্মা। দারুণ প্রত্যাবর্তন গুজরাটের পেসারের। ১৮.২ ওভারে ১৭১ রানে অলআউট হয়ে যায় মুম্বই। ৬২ রানে জেতে টাইটান্স।