কেন মা শীতলার হাতে ঝাঁটা, কেন তিনি গাধার উপর বসে থাকেন, জানেন? Ma Shitala believed to cure poxes and others diseases is worshipped during the month of Chaitra a local deity in rural bengal

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যেসমস্ত লোকদেবী বাঙালির জনজীবনে ওতপ্রোত জড়িত তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী সম্ভবত মা চণ্ডী ও মা শীতলা। এখন যেমন বাংলা জুড়ে মা শীতলার পুজো চলছে। বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে বিশেষ ভাবে জড়িত এই পুজো।  

কবে বা কখন হয় মা শীতলার পুজো হয়?

পাঁজি বলছে, মাঘ মাসে শীতলা ষষ্ঠী পালিত হয়। তবে ওই নামে পাঁজিতে কোনও ব্রত বা পুজোর উল্লেখ নেই। শ্রীপঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজার পরের দিন ষষ্ঠী তিথিতে যে-ব্রত পালিত হয় তার নাম শীতল ষষ্ঠী। ওই ব্রত স্বামীপুত্রের মঙ্গলের জন্য মেয়েরা পালন করে থাকেন। মূলত সন্তানের মঙ্গলকামনাই থাকে এর পিছনে।

আরও পড়ুন: Annapurna Puja: হাতে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে শিব চলেছেন বারাণসীর দিকে! জেনে নিন অন্নপূর্ণা পুজোর দিন-তিথি…

সাধারণত চৈত্রমাসেই গ্রামবাংলা জুড়ে মা শীতলার পুজোর রীতি। তবে, মোটামুটি ভাবে দোলের পরই এ পুজো শুরু হয়ে যায়। তারপর তা চলে গোটা চৈত্র মাস জুড়ে। চৈত্রের পরেও হয়। পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যেও শীতলাপুজোর রীতি আছে। এই সময়পর্বে যে কোনও সপ্তাহের মঙ্গল বা শনি বার এই পুজো করা বিধি।

কেন এই পুজো করা হয়? 

গ্রামবাংলা জুড়ে একটা লোকবিশ্বাস চালু যে, মা শীতলা নাকি বসন্ত রোগের বাহক, তাই অনেকেই মা শীতলার নাম শুনলে ভয় পান। মায়ের রোষ থেকে বাঁচতেই তাঁর পুজোর আয়োজন করেন। না, এটা ভ্রান্ত ধারণা বলে মনে করেন একটা বড় অংশ। তাঁরা বলেন, মা রোগ দিতে নয়, বরং রোগ হরণ করতে আসেন। শুধু বসন্ত নয়, কারও কারও মতে ম্যালেরিয়া রোগের উপশমের কথা ভেবেই এমন দেবীর কল্পনা করে মানুষ। যদিও  ম্যালেরিয়া রোগের থেকে বাঁচান যে দেবী তিনি ওলাইচণ্ডী নামেই বেশি পরিচিত, যিনি পরে আবার চণ্ডী হিসেবে পরিচিত। 

মা শীতলার হাতে কী কী থাকে, তার তাৎপর্যই-বা কী? 

Read also  Tyre colour black reasons: টায়ারের রং সব সময়ে কালোই হয় কেন? অন্য রঙের হলে কী হত

আরও পড়ুন: Basanti Puja: আর মাত্র সপ্তাহখানেক পরেই শুরু হতে চলেছে ‘দুর্গাপুজো’! জেনে নিন এর দিনবদলের কারণ…

মা শীতলার হাতে থাকে ঝাঁটা , শূর্প বা কুলো, পাখা ও কলস। ঝাঁটা, কুলো ইত্যাদি দিয়ে আমরা সাধারণত ময়লা পরিষ্কার করি বা ঝাড়াই-বাছাই করি। মা শীতলা তাঁর এই দুটি উপকরণ দিয়ে রোগ তাড়ান। আর ওই কলস আসলে অমৃতকুম্ভ। ঠিক সেই অর্থে অমৃতকুম্ভ নয়। এতে থাকে পুণ্যবারি, শান্তিবারি। সব দিকে তা ছড়িয়ে দেন তিনি। মা শীতলার হাতে যে পাখা থাকে, তা দিয়ে তিনি ভক্তকে, তাপিত পীড়িত ভক্তের জীবনকে শীতল করেন। তাই তিনি মা শীতলা। 

মা শীতলা কেন গাধার উপর আসীনা?

মা শীতলার বাহন গর্দভ বা গাধা। কেন গাধা? গাধা আসলে নিঃস্বার্থ ভাবে নির্বিবাদে কাজ করে চলে। এটা একটা প্রতীক। মা শীতলাও চান, কাজের এই দর্শনই অনুসরণ করা হোক মানবসমাজে। অন্য একটা মতও আছে। কবিরাজি চিকিৎসায় গাধার দুধ দিয়ে বসন্ত রোগের প্রতিষেধক বানানো হয়। তাই মা শীতলার বাহন ঘটনাচক্রে গর্দভ। কেননা, তাঁকেও তো বসন্ত রোগের নিরাময়ের দেবী বলেই মানা হয়ে থাকে।

শুধু রোগ নিরাময়ই অবশ্য তাঁর কাজ নয়। তিনি দুর্ভিক্ষ খরা ইত্যাদি প্রতিরোধ করেন, গবাদি পশুদেরও রক্ষা করে থাকেন।   

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 



Source link