Taslima Nasrin: ভেঙেছে তিন বিয়ে! ‘কোনও স্বামীর সঙ্গে সংসার করিনি…’, একা বাঁচার টোটকা তসলিমার

বিতর্ক তাঁর নিত্যসঙ্গী। নেটমাধ্যমে মনের কথা মন খুলে বলতে বরাবরই অকুতোভয় তিনি। এর জেরে বহুবার ট্রোলের মুখেও পড়তে হয় বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। কিন্তু তাতে তাঁর বয়েই গেল! সম্প্রতি চর্চায় তসলিমার একটি ফেসবুক পোস্ট। সেখানে নিজের শর্তে বাঁচার টোটকা শেয়ার করেছেন বাংলাদেশি লেখিকা।

তসলিমার কথায়, ‘দুটো কারণে আমি আমার মতো বেঁচে থাকতে পেরেছি। এক, নিজের টাকা নিজে কামিয়েছি, দুই, কোনও স্বামীর সঙ্গে সংসার করিনি।’ হ্যাঁ, সিঙ্গলহুড নাকি তাঁর ভালো থাকার কারণ। ভক্তরা এই পোস্টে তসলিমার প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মতে তসলিমা বরাবরই সাহসী। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর একলা বাঁচাটা আজও যেখানে ব্যর্থ জীবন হিসাবেই ধরা হয়, সেখানে একরাশ মুক্ত বাতাস তসলিমা। 


শুধু স্বামীর সংসার না করাই নয়, এক জনৈক তসলিমাকে মনে করিয়ে দেন ‘আরও একটা হল, বাচ্চা নেননি’। উত্তরে লেখিকা জানান, ‘একদম সঠিক’। পর মুহূর্তেই তসলিমা মনে করান, সংসার কিন্তু তিনি করছেন। তবে সেই সংসার একান্তই তাঁর নিজের সংসার, অন্য কারুর নয়। তসলিমার এক ভক্ত তাঁকে কুর্নিশ জানিয়ে লেখে, ‘নিজের উপার্জন আর সুস্থ শরীর …এই দু’টো থাকলেই জীবন এক উদযাপনের অভিযাত্রা। আপনার জন্যে শুভেচ্ছা রইল’। অপর এক নেটিজেন লেখেন, ‘জীবন নদীতে নিজের নৌকোর দাঁড় নিজের হাতে, এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে’।

এখানেই থেমে থাকেননি তসলিমা। লেখিকা আরও জানান, এই জীবনে তিনি যাদের ভালোবাসেছেন, তারা তাঁকে ভালোবাসেনি। লেখিকা ফেসবুকের দেওয়ালে লেখেন, ‘হয়তো খানিকটা বেসেছে, তবে আমার মতো উজাড় করে নয়। যারা আমার বাঁধন ছেড়ে যেতে চেয়েছে, তাদের আমি চিরকালই নির্বিঘ্নে যেতে দিয়েছি। আমি কষ্ট পেলেও তাদের কষ্ট পেতে দিইনি। এরকমও হয়েছে, কেউ আমাকে খুব ভালোবাসছে, অথচ আমি লক্ষ্যই করিনি। কখনও লক্ষ্য করলেও আদিখ্যেতা ভেবে সরে গেছি’।

জীবন নিয়ে লেখিকার উপলব্ধি, ‘পৃথিবীতে পথ চলতে চলতে নানা রকম মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, কারও কারও সঙ্গে বন্ধুত্বও হয়েছে। প্রতিবারই মনে হয়েছে এই বন্ধুত্ব চিরকালের। অথচ এক সময় যে যার মতো যে যার স্রোতে ভেসে গেছি। খড়কুটোর মতো জীবন। ভেসে ভেসে কে জানে কোথায় যায় কতদূর যায়।’

Read also  Mamata-Arijit: অরিজিতের স্বপ্নপূরণে পাশে মমতা! হাসপাতাল তৈরির কাজে সহযোগিতার নির্দেশ প্রশাসনকে

তবে বাঁধন-ছাড়া এই জীবনযাপন নিয়ে তসলিমার সঙ্গে সহমত নয় অনেকেই। একজন সমালোচক লেখেন, ‘ভয়ংকর চিন্তা ভাবনা, তাহলে তো সারা পৃথিবীর মানুষ স্বাধীন থাকতে চায়। এই ভাবনা যদি আপনার বাবা মা করতো?’ অপর একজন লেখেন, ‘সম্পর্ক ছাড়া জীবন অর্থহীন। এই ভাবনা বড্ড বেমানান’। 

যদিও সমালোচনা-কটাক্ষ নিয়ে কোনওদিই পরোয়া করেন না তসলিমা নাসরিন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময়ই তসলিমা রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহকে বিয়ে করেন। ১৯৮১ বা ১৯৮২ সাল নাগাদ, ১৯৮৬ সালে ভেঙে যায় সেই বিয়ে। পরবর্তীতে নাঈমুল ইসলাম খানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তবে টেকেনি সেই বিয়েও। নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই ভাঙে লেখিকার দ্বিতীয় বিয়ে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মিনার মাহমুদকে বিয়ে করে নেন তাসলিমা। তবে সেই বিয়েও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। 

Source link