শিক্ষকের অভাব! মালদহে সরকারি স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন মিড ডে মিলের রাঁধুনি
মালদহ : অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। মালদহে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার দায়িত্বে মিড ডে মিলের রাঁধুনি। এমনই ঘটনা হয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভজমোহন নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অভিযোগ, সব মিলিয়ে কার্যত বেহাল অবস্থা স্কুলে। একদিকে স্কুলের শিক্ষকের ঘাটতি, এরইমধ্যে এক পার্শ্বশিক্ষক আবার দীর্ঘদিন অনিয়মিত। অন্য এক শিক্ষক ছুটিতে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে রাঁধুনির হাতে শিক্ষকতার দায়িত্ব। এমনটাই সাফাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের।
জানা গিয়েছে, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের এই প্রাথমিক স্কুলে দুুুশোরও বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন মাত্র চারজন। তাঁদের মধ্যে একজন পার্শ্বশিক্ষক। যিনি আবার দীর্ঘ দিন ধরেই নিয়মিত বিদ্যালয় আসেন না বলে অভিযোগ। ফলে একজন ছুটি নিলেই শিক্ষকের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় মাত্র দু’জনে। অথচ, শ্রেণী রয়েছে ছয়টি। এই অবস্থায় মিড ডে মিলের রাাঁধুনিকে দিয়েই চলছে শিশুদের পড়াশোনার পাঠ।
এমন ব্যবস্থা কতটা যুক্তিসঙ্গত? কতটা শিখছেন খুদে পড়ুয়ারা ? এমন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। জানাগিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই এই স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার পাশাপাশি বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন রাঁধুনি সান্ত্বনা দাস। শিশুদের পড়ানো থেকে শুরু করে লেখার খাতা দেখা সবই করছেন তিনি। অভিযোগ, এমন আজব বন্দোবস্ত একদিন বা দুই দিনের নয়, অধিকাংশ দিনেই এই ছবি ভজমোহন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছাত্র-ছাত্রীদের এভাবে পড়ানোর ব্যবস্থায় অখুশি অভিভাবকেরা।
আরও পড়ুন : স্কুলের ছাদে ফলছে সবজি, মিলছে মিড ডে মিলে সাহায্য, অন্য ছবি পূর্বস্থলীতে
স্কুল সূত্রে জানাগিয়েছে, বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা ২১০। নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি স্কুলে প্রতি ৪০ জন ছাত্র পিছু একজন করে শিক্ষক থাকার কথা। সেই হিসেবে স্কুলে অন্তত ছয় জন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু, একজন পার্শ্ব শিক্ষক সমেত শিক্ষকের সংখ্যা চার। ফলে কার্যত শিক্ষক সমস্যায় জেরবার স্কুল। এরইমধ্যে কোনও একজন শিক্ষক ছুটি নিলে খুদে পড়ুয়াদের শিক্ষকের ভূমিকায় দেখা যায় রাঁধুনিকে।
আরও পড়ুন : প্রেমিককে বিয়ে করে জার্মানি থেকে ভারতে, গ্রামের পেঁয়াজ ক্ষেতে চাষ করছেন বিদেশিনী বধূ
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক দাস বলেন, ” মাত্র চারজন শিক্ষক নিয়ে স্কুল চলছে। এদের মধ্যে একজন ছুটিতে ।পার্শ্বশিক্ষক দীর্ঘদিন অনিয়মিত। এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীরা যাতে বাইরে বেরিয়েে ছুটেছুটি করতে না পারে এই কারণে রাঁধুনিকে ক্লাস দেখতে বলা হয়। ওইসময় নিজের চেষ্টাতেই যথাসম্ভব পড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি। এতে স্কুল চালাতে সুবিধেই হয়। ’’ স্কুলে শিক্ষক সমস্যা মিটলে রাঁধুনি আর ক্লাস নেবেন না, এমনটাও বলছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
যদিও অভিভাবকদের বক্তব্য়, বিষয়টি গুরুতর। অবিলম্বে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের উচিত এবিষয়ে সদর্থক পদক্ষেপ করা। তা না হলে শিশুশিক্ষা ভেঙে পড়বে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Education, Malda