পরেশ রাওয়ালের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তৃণমূল কংগ্রেসের – News18 Bangla

আবীর ঘোষাল, কলকাতা: সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সম্প্রতি পরেশ রাওয়ালের বাংলা বিরোধী মন্তব্যের চরম নিন্দা করেছে। দলের তরফে বলা হয়েছে, বিজেপি যে অন্য সংস্কৃতিকে অসম্মান এবং অশ্রদ্ধা করে তা এই মন্তব্যের মাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছে। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস শুক্রবার অভিনেতা এবং প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ পরেশ রাওয়ালের বাঙালি এবং তাঁদের খাদ্যাভ্যাসকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে।

গুজরাত নির্বাচনের আগে বিজেপির হয়ে প্রচারের সময়, প্রাক্তন আহমেদাবাদ পূর্ব লোকসভার সাংসদ দাবি করেছিলেন যে ‘‘গুজরাতিরা যদি বিজেপিকে ভোট না দেয় তবে তাদের রান্নার গ্যাস দিয়ে বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করতে হবে ৷’’

পরেশ রাওয়ালের এই মন্তব্যের জন্য সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি নিন্দা করেছিল। প্রতিমন্ত্রী ডঃ শশী পাঁজা বলেছেন যে প্রাক্তন সাংসদের মন্তব্যের মাধ্যমে বিজেপির হিংসা, ঘৃণা এবং বিভাজনের রাজনীতি আবারও প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি পরেশ রাওয়ালের মন্তব্যটি ছিল সম্পূর্ণ অবমাননাকর এবং প্রচণ্ড সংবেদনশীল।’’

আরও পড়ুন– ব্রাজিলকে হারিয়েও বিদায় ক্যামেরুনের! আবু বকরের গোলে আফ্রিকান সিংহের গর্জন

তিনি আরও বলেছেন, “বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকার গ্যাস সিলিন্ডারের জেটগতিতে বেড়ে চলা দাম এবং মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে অক্ষম। এই কারণেই তারা এই প্রসঙ্গকে ঘুরিয়ে দেয় এবং বাঙালিদের মাছের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে কটুক্তির করে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গ শাখার নবনিযুক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেল ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছেন, “মোদিজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুতে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তা কি পরেশ রাওয়াল ভুলে গিয়েছেন? গ্যাসের দাম বাড়লে তা হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই প্রভাবিত করে। এটা লজ্জাজনক যে একজন অভিনেতা, যিনি ‘ওহ মাই গড’-এর মতো একটি ছবি তৈরি করেছেন, তিনি গুজরাতে দুটি ভোট পাওয়ার জন্য নির্বাচনী প্রচারের সময় এমন কথা বলছেন।”

আরও পড়ুন– কেতু গোচর; এই সব মানুষের জীবনে আসতে চলেছে রঙিন পরিবর্তন

Read also  উত্তরবঙ্গ সফরে মঞ্চেই অসুস্থ নিতিন গড়কড়ী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

ডঃ শশী পাঁজা যোগ করেছেন যে পরেশ রাওয়াল মূলত বাংলাকে টার্গেট করেছিলেন কারণ, “বিজেপি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিততে পারেনি, এবং এখনও সেই পরাজয় হজম করতে পারেনি।’’ তিনি আরও দাবি করেছিলেন যে বাঙালিরা কখনই এই জাতীয় মন্তব্য সহ্য করবে না।সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, ইতিমধ্যে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে মাছ খাওয়ার খাদ্যাভ্যাস বাঙালিদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ ৷ “ইলিশ মাছ_এবং_চিংড়ি_ আমাদের বাঙালিদের মধ্যে গেঁথে আছে, সেটা মোহনবাগান হোক বা ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। বিজেপি নেতাদের আমাদের পছন্দের খাবার নিয়ে উপহাস করার মতো ভুল করা উচিত নয়।’’

কুণাল ঘোষ বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে মৎস শিল্প অগণিত ব্যক্তির জীবিকা ও পেশা, এবং তা তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে সাহায্য করে। তিনি বলেন, “বিজেপি সরকার আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং আমাদের জনগণকে নিয়ে উপহাস করছে। জনগণের বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, বিজেপির নিজেদের সাংস্কৃতিক অভ্যাস জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করাটা, তাদের একটা চিরাচরিত রীতি।’’

সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র পরেশ রাওয়ালের মন্তব্য নিয়ে দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীর মতো বঙ্গ বিজেপি নেতাদের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি যোগ করেছেন, ‘‘বিজেপি নেতাদের অবশ্যই তাদের দলের ক্যাডারদের জবাব দিতে হবে, যারা আমাদের মাছের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ককে অবমূল্যায়ন করছে।’’

পরেশ রাওয়াল বলেছিলেন, “গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেশি, কিন্তু দাম কমবে। মানুষও কর্মসংস্থান পাবে। কিন্তু রোহিঙ্গা অভিবাসী এবং বাংলাদেশিরা দিল্লির মতো আপনার আশপাশে বসবাস শুরু করলে কী হবে? গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কি করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবেন?” সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ার পরে, পরেশ রাওয়াল পরে ট্যুইট করে সাধারণ স্তরে ক্ষমা চেয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে তিনি বাঙালিদের নয়, অবৈধ অভিবাসীদের কথা বলছেন।

Tags: BJP, Gujarat Elections 2022, Paresh Rawal

Source link