কুন্তলকে সংবর্ধিত করেছে একাধিক সংবাদমাধ্যম! মিডিয়া ট্রায়ালে নিশানা বন্ধের দাবি তৃণমূলের | কুন্তল ঘোষ নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁকে সংবাদমাধ্যম সংবর্ধনা দেয়, মুখ খুলল তৃণমূল কংগ্রেস

কুন্তলকে সংবর্ধনা সংবাদমাধ্যমের!

কুন্তল ঘোষকে নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড বলে উল্লেখ করেছেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী কুন্তল ভিনরাজ্যে টাকা পাঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ। কুন্তলের টাকা টলিউডেও গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। সমাজসেবার নানা কাজকর্মের মধ্যে নিজের ইমেজ বিল্ডিংয়েও কুন্তল দুর্নীতির টাকা ব্যবহার করেছিলেন কিনা সেটাও তদন্তসাপেক্ষ। আর সেখানেই মিলছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সমাজসেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা কুন্তলের

সমাজসেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা কুন্তলের

কুন্তলের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে বেশ কিছু ছবি। অর্থাৎ সমাজসেবী হিসেবে নিজেকে জনমানসে প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি কুন্তল যে সচেতনভাবেই করেছেন সেটা স্পষ্ট। করোনাকালে কুন্তল সবুজসঙ্গী বলে একটি সংগঠন গড়েছিলেন। রেড ভলান্টিয়াররা যেভাবে মানুষের পাশে থেকে করোনাকালে কাজ করেছেন, তেমনই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কর্মীদের নিয়ে কুন্তল গড়েন সবুজসঙ্গী। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যার কভারেজও কুন্তলের সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে।

সমাজসেবার কাজেও দুর্নীতির টাকা?

সমাজসেবার কাজেও দুর্নীতির টাকা?

করোনাকালে কুন্তল যেভাবে সবুজসঙ্গীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সে কারণে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম কুন্তলকে ব্র্যান্ড আইকনের সম্মান দেয়। কুন্তলের হাতে শংসাপত্র তুলে দিতে দেখা গিয়েছিল টলিউড অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিককে। সেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের ছবি কুন্তল পরদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এবং সায়নী ঘোষের সহযোগিতায় সবুজসঙ্গী কাজ করেছে বলে দাবি করেন কুন্তল।

সংবাদধ্যমের সংবর্ধনার ছবি ফলাও করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়

সংবাদধ্যমের সংবর্ধনার ছবি ফলাও করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়

এরপর ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে একটি সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের তরফে কুন্তলকে সংবর্ধিত করা হয়। জেলা তথা সমাজের সার্বিক মঙ্গলে অবদানের জন্যই এই স্বীকৃতি বলে জানানো হয়। সেই শংসাপত্র ও ট্রফিটির ছবি কুন্তলের সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনও জ্বলজ্বল করছে। মনে করা হচ্ছে, করোনাকালে তিনি সবুজসঙ্গীর মাধ্যমে যে কাজকর্ম করেছিলেন তার জন্যই এই স্বীকৃতি।

কুন্তলের সংবর্ধনা প্রসঙ্গে কী বলছে তৃণমূল?

কুন্তলের সংবর্ধনা প্রসঙ্গে কী বলছে তৃণমূল?

কুন্তল-শান্তনুর গ্রেফতারিতে বিরোধীরা তো বটেই, সংবাদমাধ্যমের একাংশও তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে আঙুল তুলছে। এবার সংবাদমাধ্যমের তরফে কুন্তলকে সংবর্ধনার প্রসঙ্গেই সরব হলো তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, আমি বিশ্বাস করি না দেশের গুরুত্বপূর্ণ, নামকরা, প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলি কুন্তলের দুর্নীতির কথা জানলে তাঁকে সংবর্ধনা দিত না। না জেনেই এই সংবর্ধনা দেওয়া হয় বলে আমার বিশ্বাস।

দুর্নীতিতে তৃণমূলের জিরো টলারেন্স নীতি

দুর্নীতিতে তৃণমূলের জিরো টলারেন্স নীতি

অরূপ চক্রবর্তী আরও বলেন, সংবাদমাধ্যম যেমন কুন্তলের অনৈতিক কাজ সম্পর্কে না জেনে সংবর্ধিত করেছে, তেমন তৃণমূল কংগ্রেসও যদি জানত তাঁর আগের ও পরের নানা অস্বচ্ছ, অসৎ কাজকর্মের কথা তাহলে তাঁকে দলের সাংগঠনিক স্তরের পদ দিত না। এই ধরনের অসৎ, অস্বচ্ছ ব্যক্তিরা সব সময়ই নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রশাসন, সরকার কিংবা শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থাকতে চায়। দুর্নীতির কথা জানার সঙ্গে সঙ্গেই কুন্তলকে দল বহিষ্কার করেছে।

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ হোক

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ হোক

তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্রর কথায়, দুর্নীতির প্রশ্নে তৃণমূল সব স্তরে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলে। কাউকে রেয়াত করা হয় না, দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়। তারপরেও মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে তৃণমূলকে নিশানা করা হচ্ছে। কারও দিকে আঙুল তোলার আগে সেটা যাতে নিজের দিকে না ওঠে সে ব্যাপারে সচেতন থাকা কর্তব্য। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই দুর্নীতির সঙ্গে তৃণমূলকে জোর করে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম যখন না জেনে কুন্তলকে সংবর্ধনা দিয়েছে, তখন তৃণমূলও তাঁর অনৈতিক কাজকর্ম সম্পর্কে অন্ধকারে ছিল। এটা উপলব্ধি করে সংবাদমাধ্যমেরও মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করার দাবি তুলেছেন অরূপ।

Read also  বগটুইকাণ্ড: লালন শেখের দেহ উদ্ধার, ভূত তাড়াতে ঝাঁটা তুলে নিতে বললেন দেবাংশু

Source link