কারিগরি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম জানিয়েছেন, আমরা আজ অতিরিক্ত সচিবের সাথে বৈঠক করেছি, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখিনি। এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। তাই আমরা কঠোর কর্মসূচির দিকে এগোব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সাথে শিক্ষার্থীদের বৈঠক শুরু হয়। এতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা তাৎক্ষণিক বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের সব কারিগরি পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো—পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু করতে হবে এবং শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ দিতে হবে। বেসরকারি খাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে।
গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে ছয় দফা দাবি আদায়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ঢাকার শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে সারাদেশের জেলাগুলোতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সাতরাস্তা মোড়ে আসেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খান। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং পদোন্নতিতে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য কোনো কোটা রাখা হবে না বলে জানান।
ডিজি ও অধ্যক্ষের আশ্বাস সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান অব্যাহত রাখেন। তারা দাবি করেন, প্রতিটি দাবি পূরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা লিখিতভাবে জানাতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
ছয় দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে রেলপথ ব্লকেডের ঘোষণা দিয়েছিলেন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দিয়েছিলেন। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের আশ্বাসে কর্মসূচি শিথিল করে শিক্ষার্থীরা সরকারের সাথে আলোচনায় বসেছেন।
