ক্লাব বিশ্বকাপে ১০-০ গোলের ফলাফল এর আগে কেউ দেখেনি। নতুন ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে ফুটবলপ্রেমীরা এমনই এক ম্যাচের সাক্ষী হলেন। অথচ এক মাসব্যাপী এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল প্রতিযোগিতামূলক খেলা উপহার দেওয়া এবং সব মহাদেশের দলকে সমান সুযোগ দেওয়া।
সেই সুযোগ দেওয়ার তাগিদে ফিফা নিউজিল্যান্ডের অপেশাদার ক্লাব অকল্যান্ড সিটি এফসিকে ডেকে আনে। এই দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় শখের বশে ফুটবল খেলেন, বাকি সময় তাঁদের নিজ নিজ পেশায় ব্যস্ত থাকতে হয়।
বায়ার্ন মিউনিখের হ্যারি কেইন, জামাল মুসিয়ালা বা টমাস মুলারের মতো তারকাদের মাঠে দেখার স্বপ্ন যাঁদের, তাঁদের বিপক্ষে খেলা যেন স্বপ্নপূরণের মতো। কিন্তু সেই স্বপ্ন ১০-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারের লজ্জায় রূপ নেয়। হারের পর দলটি মাথা নিচু করে বলে, “আমরাই ক্লাব বিশ্বকাপের একমাত্র শ্রমজীবী দল।”
ওশেনিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব পূরণের জন্য অকল্যান্ড সিটিকে সুযোগ দেওয়া হয়। দলটির খেলোয়াড়রা পেশায় ভিন্ন। কেউ মেডিকেল প্রতিনিধি, কেউ ডেইরি ফার্মে সরবরাহকারী, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। টুর্নামেন্টে খেলতে অনেকের চাকরি থেকে বিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছে।
এই দল এতটাই অপেশাদার যে খেলোয়াড়রা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৯০ ডলার বেতন পান। অন্যদিকে বায়ার্নের হ্যারি কেইন সপ্তাহে পান ৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮৪ ডলার।
নিউজিল্যান্ড জাতীয় দল আগামী বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলেও তাদের ক্লাব ফুটবলের দৈন্যদশা স্পষ্ট। দেশটির ফুটবল লিগ এখনো পেশাদার হয়ে ওঠেনি। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা সাধারণত ইউরোপ বা অস্ট্রেলিয়ার লিগে খেলেন। নিউজিল্যান্ডে পেশাদার ক্লাব বলতে মাত্র দুটি, তার একটি অকল্যান্ড।
অস্ট্রেলিয়া ওশেনিয়ার দেশ হলেও ফিফার হিসাবে তারা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের অংশ। ফলে ওশেনিয়ার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অকল্যান্ড ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা পায়। অতীতে তারা এই টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও একটি ম্যাচ খেলে নিঃশব্দে বিদায় নিয়েছে। এবার তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখ, বেনফিকা ও বোকা জুনিয়র্সের মতো দলগুলোর। আর শুরুটাই হলো বায়ার্নের কাছে লজ্জাকর পরাজয় দিয়ে।
