কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল ২০২৫-এ পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনায় ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ ও ‘পূর্বপরিকল্পিত’ আখ্যা দিয়ে সংগঠনটি জানিয়েছে, এটি কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার উদ্দেশ্যে ‘সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’।
টিআরএফ-এর এক বিবৃতিতে বলা হয়, হামলার দায় স্বীকার করে তাদের নামে একটি পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তারা দাবি করেছে, এটি তাদের নিয়ন্ত্রিত ছিল না, বরং ‘রাষ্ট্র-পৃষ্ঠপোষকতায় সাইবার হামলার’ মাধ্যমে করা হয়েছে। সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ তদন্তে এমন হামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও তারা জানায়।
টিআরএফ অভিযোগ করেছে, ভারতীয় সাইবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমন মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে কাশ্মীরের রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে চায়। তারা দাবি করেছে, অতীতে ভারত কাশ্মীরি প্রতিরোধ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ ধরনের কৌশল ব্যবহার করেছে। উদাহরণ হিসেবে তারা ২০০০ সালের চট্টিসিংপুরা গণহত্যার কথা উল্লেখ করেছে, যেখানে ৩৫ শিখকে হত্যা করা হয় এবং তা ‘জঙ্গি’দের ওপর দোষ চাপিয়ে কাশ্মীরে সামরিক অভিযানের ন্যায্যতা দেওয়া হয়।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত টিআরএফ নিজেদের কাশ্মীরের ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে দাবি করে। তারা সাধারণত টেলিগ্রাম ও সামাজিক মাধ্যমে তাদের বার্তা প্রচার করে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ টিআরএফ-কে পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তইয়েবার একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করে, যদিও সংগঠনটি ধর্মীয় ভাষার পরিবর্তে ‘প্রতিরোধ’-কেন্দ্রিক ভাষা ব্যবহার করে।
টিআরএফ কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র কার্যক্রমে জড়িত এবং প্রায়ই ছোট আকারের হামলা ও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যার দায় স্বীকার করে। তাদের ঘোষিত লক্ষ্য কাশ্মীরকে ভারতের শাসন থেকে মুক্ত করা। ২০২৩ সালে ভারত সরকার টিআরএফ-কে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে।
২২ এপ্রিল পেহেলগামের বাইসারান মেডোতে হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত ও ১৭ জন আহত হন। ভারতীয় পুলিশ তিনজন সন্দেহভাজনের নাম প্রকাশ করেছে, যাদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক ও একজন স্থানীয় কাশ্মীরি। ভারত দাবি করেছে, হামলায় পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, যা ইসলামাবাদ অস্বীকার করেছে।
