বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ও খ্যাতিমান পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক এম শমশের আলী আর নেই। শনিবার রাত ২টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এক শোকবার্তায় জানায়, রোববার জোহরের নামাজের পর ধানমন্ডি ৭ নম্বর সড়কের বায়তুল আমান মসজিদে অধ্যাপক শমশের আলীর জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই দিন ছুটি ঘোষণা করেছে।
২০০২ সালে যাত্রা শুরু করা সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া, ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য এবং আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির সদস্য ছিলেন।
অধ্যাপক শমশের আলীর জন্ম ১৯৪০ সালের ৯ নভেম্বর, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায়। তিনি যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ১৯৫৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্মান এবং ১৯৬০ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৬১ সালে তিনি পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর উচ্চতর ডিগ্রির জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। ১৯৬৫ সালে তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই বছরই দেশে ফিরে তিনি ঢাকার আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন।
পরে ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন।
বিজ্ঞানী শমশের আলী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে: ‘পবিত্র কোরআনে বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত’, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুসলিম অবদান’ এবং ‘আলাদিনস রিয়েল ল্যাম্প: সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’।
