বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যদি প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে কাজ করে, তবে আগামী জুনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা গড়ে উঠবে। তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের প্রতি অঙ্গীকার রয়েছে এবং অনেক সংস্কারের বিষয়ে তাদের মধ্যে ঐক্য রয়েছে। তিনি বলেন, “ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সবাই একমত হবে, এটাই হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক সাফল্য।”
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল ২০২৫) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাইফুল হকের নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।
তিনি বলেন, “আমরা সেই পুরোনো যুগে ফিরতে চাই না, যেখানে একটি দল কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠে এবং তার নেতৃত্ব ফ্যাসিবাদী শাসকের রূপ নেয়।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট হলো পুরোনো ব্যবস্থাকে পিছনে ফেলে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা শুরু করা, যেখানে মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে মানুষ যে নির্বাচনের অপেক্ষায় ছিল, এবার সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে বিবেচনা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই আন্দোলন জনগণের মধ্যে বিশাল প্রত্যাশা তৈরি করেছে। আমরা চাই না এটি হতাশায় বা দুঃস্বপ্নে রূপ নিক। আমরা সবাই এই লক্ষ্যে কাজ করছি।”
সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি সংবিধান চাই, যেখানে কোনো নাগরিক তাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, মতাদর্শগত বা সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের কারণে রাষ্ট্র কর্তৃক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা চাই, যেখানে কোনো ব্যক্তি বা দল ক্ষমতাকে স্বেচ্ছাচারের লাইসেন্স হিসেবে বিবেচনা করবে না। ক্ষমতার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের সামনে দায়বদ্ধতার সাংবিধানিক ও আইনি নিশ্চয়তা থাকতে হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে সাইফুল হক বলেন, “কমিশনের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা বা পক্ষপাত নেই। তারা গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করবে। আমরা ন্যূনতম জাতীয় ঐক্যের পক্ষে দাঁড়াব। এ নিয়ে অতিরিক্ত টানাটানি করা উচিত নয়, কারণ বেশি টানলে দড়ি ছিঁড়ে যেতে পারে।”
