বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
প্রচ্ছদ্ধসংবাদছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক

ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক

spot_img
spot_img

ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যার এক প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে। প্রবন্ধে বলা হয়, “মুসলিমরা না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়েছিল,” যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির কর্তৃপক্ষ এটিকে লেখকের নিজস্ব মত বলে উল্লেখ করেছে।

প্রবন্ধের লেখক আহমেদ আফগানী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, তাঁর লেখা গবেষণালব্ধ এবং যথার্থ। তিনি লেখাটি প্রত্যাহারের কোনো চিন্তা করছেন না। তিনি বলেন, “স্বৈরাচার মুজিবের ইসলাম-বিরোধী অবস্থান নিয়ে আমি তথ্যভিত্তিক আলোচনা করেছি।”

আফগানী জানান, তাঁর লেখা ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যায় বলেন—
১. লেখার সম্পূর্ণ দায় তাঁর নিজের, এবং তিনি মনে করেন লেখাটি যথাযথ।
২. প্রবন্ধের একটি মন্তব্য— “সে সময়ে অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, যা তাদের ব্যর্থতা ও দূরদর্শিতার অভাব ছিল। আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন।”—নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।
৩. তিনি দাবি করেন, ১৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার নিয়ে এই মত পেয়েছেন এবং এতে বিব্রত নন।

এ বিষয়ে ‘ছাত্র সংবাদ’ তাদের নিজস্ব অবস্থান ব্যাখ্যা করে জানায়, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের সংগ্রাম। এটি ধর্মবিরোধী কোনো লড়াই ছিল না।” পত্রিকাটির ফেসবুক পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধারা রণাঙ্গনে নামাজ আদায় করতেন, যা প্রমাণ করে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ইসলামবিরোধিতার কোনো সম্পর্ক ছিল না। বরং শাসকগোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ইসলামকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেছিল।

এদিকে ‘ছাত্র সংবাদ’ তাদের বক্তব্যে আরও উল্লেখ করে, “স্বাধীন বাংলা বেতার মুক্তিযুদ্ধকে ‘আল্লাহর পথে জেহাদ’ বলে প্রচার করেছিল, যা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণার মূল উৎস হিসেবে ইসলামের ভূমিকা তুলে ধরে।”

প্রবন্ধটি প্রত্যাহার করা হবে কিনা—এমন প্রশ্নে ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ জানান, “লেখক বা গবেষক তাঁর নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন, তবে প্রকাশনারও কিছু দায় থাকে। ছাত্র সংবাদ তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে, এবং লেখকও তাঁর মতামতের দায় স্বীকার করেছেন।”

আরো পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -

সর্বাধিক পাঠিত