শনিবার, জুন ৭, ২০২৫
প্রচ্ছদ্ধরাজনীতিছাত্রদের ক্যাম্পাসে থাকা উচিত, মন্ত্রণালয়ে নয়: রিজভী

ছাত্রদের ক্যাম্পাসে থাকা উচিত, মন্ত্রণালয়ে নয়: রিজভী

spot_img
spot_img

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্রদের প্রধান কাজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা ও গবেষণা করা, মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করা নয়। তিনি মনে করেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছাত্র সংগঠনের কমিটি দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের ইমেজের জন্য ক্ষতিকর। সমাজের কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ছাত্রদের প্রলোভন দিয়ে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় ৬০ লাখ আসামি: মুক্তি কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “শুনেছি প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। তিনিও শেখ হাসিনার বিদ্বেষ ও আক্রোশের শিকার হয়েছিলেন। আমরাও আন্দোলন-সংগ্রামে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিছু উপদেষ্টাও নিপীড়নের শিকার। তাদের মামলা প্রত্যাহার হলে লাখ লাখ মানুষের মামলা কেন প্রত্যাহার হচ্ছে না?” তিনি এসব মিথ্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের এমপি বানিয়েছেন। তার কাছে গডফাদার ও মাদক কারবারিরা ছিলেন সম্মানিত। এস আলম, সালমান এফ রহমানের মতো তার ঘনিষ্ঠরা টাকা পাচার করেছেন, যা কল্পকাহিনীকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই ঘটনাগুলো বাস্তব ও ভয়াবহ। আমেরিকার মতো দেশে যেখানে ফ্ল্যাট কেনা কঠিন, সেখানে হাসিনার মন্ত্রী-এমপিরা সম্পত্তি কিনেছেন। শেখ পরিবারের টিউলিপ সিদ্দিকও এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নন। হাসিনার পিয়ন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকার মালিক, আর এস আলমের গৃহকর্মী ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। এই লুণ্ঠিত অর্থ দেশে ও বিদেশে অপকর্মে ব্যবহৃত হচ্ছে।

রিজভী উল্লেখ করেন, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতীক ব্যবহারের কারণে শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের গ্রামের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাচার করা অর্থের জোরে ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনও হুমকি ও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ মিথ্যা মামলা দিয়েছেন, যাতে তার লোকেরা ব্যাংক লুট করতে পারে এবং কেউ প্রতিবাদ না করে। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করেছেন, নিপীড়নের আগুন জ্বালিয়ে রেখেছেন।

রিজভী আরও বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ মাস পেরিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছিলেন। জনগণ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, “নির্বাচন নিয়ে দ্বিধা কেন? ডিসেম্বর না জুন—কবে নির্বাচন হবে, তা স্পষ্ট করুন।”

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ মামলা এখনও প্রত্যাহার হয়নি। তাদের কোর্টে বারবার হাজিরা দিতে হচ্ছে, অপমান সহ্য করতে হচ্ছে। “আমরা খুন বা মারামারি করিনি, তবু আমাদের মিথ্যা মামলায় কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। শেখ হাসিনার জজ-ম্যাজিস্ট্রেটরা আমাদের নির্যাতন করেছেন,” বলেন তিনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এ এস এম আমানুল্লাহ, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন, ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবং সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

আরো পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -

সর্বাধিক পাঠিত