চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট অবশেষে মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে। শিক্ষার্থীদের ৩২ ঘণ্টার আমরণ অনশনের পর জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের কাছে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান আমরণ অনশন প্রত্যাহার করে। প্রায় ৩৪ ঘণ্টা পর তারা অনশন ভাঙেন। এর আগে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে স্যালাইন নিয়েও অনশনে অবস্থান করছিলেন।
অনশন শেষে চারুকলার শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল বলেন, ‘সিন্ডিকেটে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা অনশন প্রত্যাহার করেছি।’
চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমাবর্তনের পর এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনকেও এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। ২০১০ সালে নগরীর সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে একীভূত করে চারুকলা ইনস্টিটিউট গঠিত হয়। বর্তমানে এটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত। ২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলন চলে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের ১০০তম দিনে শিক্ষার্থীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সেশনজট কমাতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেন। এরপরও বিভিন্ন সময়ে তারা এই দাবি তুলে আসছিলেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে চারুকলার শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলন শুরু করেন। ১২ ডিসেম্বর আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান চলতি বছরের মার্চের মধ্যে চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন। কিন্তু দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থীরা পুনরায় আন্দোলনে নামেন।
