চট্টগ্রামে ৭১ টিভি ব্যুরো প্রধান ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক সাইফুল শিল্পীর বাসায় দুই দফা তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সভায় এই অভিযোগ করেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শিল্পী।
সাইফুল ইসলাম শিল্পী বলেন, অতি ঠুনকো বিষয়কে কেন্দ্র করে একটি মহল প্রথমে আমাকে উদ্দেশ্য করে হুমকি সম্বলিত ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। পরবর্তীতে আমিসহ চারজনের নামে সিএমইউজের নাম উল্লেখ করে প্রথমে জিড়ি এবং পরবর্তীতে মামলা দায়ের করে। এরপর গত শুক্রবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য এবং তাদের সাথে থাকা ২৫/৩০ জন ব্যক্তি আমার বাসা অবরুদ্ধ করে রাখে।
মামলার পর থেকে আমি বাসার বাইরে অবস্থান করছিলাম এবং আমার পরিবারের সদস্যরা টানা দুইদিন বাসার ভিতরে অবরুদ্ধ ছিল।
সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তিনি বাসায় না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ সদস্য এবং তাদের সাথে থাকা ব্যক্তিরা বারবার বাসায় প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে কোন সাংবাদিক ও তার পরিবারের উপর এই ধরনের নির্যাতন হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিনিধি ও সিএমইউজের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেলিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য মুস্তাফা নঈম, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক এবং ডেইলি পিপলস ভিউর নির্বাহী সম্পাদক সালেহ নোমান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য গ্লোবাল টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান গোলাম মাওলা মুরাদ, সিএমইউজের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ও সিএমইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিল্পী, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো প্রধান ও সিএমইজের কোশাধ্যক্ষ মজুমদার নাজিম উদ্দিন, দৈনিক দিনকালের ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল, সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আবু সুফিয়ান, দৈনিক কর্ণফুলীর বার্তা সম্পাদক জামাল উদ্দিন হাওলাদার, দৈনিক আমার দেশের ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান নুরুল আমিন মিন্টু, এনটিভির সিনিয়র ক্যামরাপার্সন ও চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এনাম হায়দার, বাংলাভিশনের সিনিয়র ক্যামরাপার্সন চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশানের সহ-সভাপতি আকবর মুহুরী, সিএমইউজের সদস্য দিদারুল হক, ওসমান গনি, ফটো সাংবাদিক শেখ মোর্শেদ, বজলুল হক, রিমন রশ্মি বড়ুয়া প্রমুখ।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি বলেন, একটি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শিল্পীর বাসা পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা যেভাবে অবরুদ্ধ করে রেখেছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও নজিরবিহীন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও অন্যান্য কর্মকর্তারা এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তিনি অবিলম্বে এই অমানবিক ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, ব্যক্তিগত রেষারেষির জের ধরে একজন সাংবাদিকের পরিবারের নিরীহ সদস্যদের উপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা নির্মমতার চরমসীমা অতিক্রম করেছে। বিকৃত মানসিকতার মানুষের পক্ষেই কেবল এই ধরনের কর্মকাণ্ড করা সম্ভব। সভায় বক্তারা সাইফুল ইসলাম শিল্পীর পরিবারের উপর নির্যাতন চালানো ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।