শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
প্রচ্ছদ্ধরাজনীতিএনসিপি’র আবেদন: দল নিবন্ধনের সময়সীমা তিন মাস বাড়ানো হোক

এনসিপি’র আবেদন: দল নিবন্ধনের সময়সীমা তিন মাস বাড়ানো হোক

spot_img
spot_img

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা কমপক্ষে ৯০ দিন (তিন মাস) বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসি সচিবালয়ে গিয়ে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, তাজনূভা জাবীন এবং সদস্য মনিরুজ্জামান এই আবেদনপত্র জমা দেন।

‘নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন’ শিরোনামে এনসিপি ইসির জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে এই আবেদন জানায়।

আবেদনে বলা হয়, বিগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন বর্তমান আইনের আওতায় ভোটবিহীন সংসদ নির্বাচন, জাল ভোট, রাতের ভোটসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করেছে। এছাড়া, শেখ হাসিনার নির্দেশে ওই কমিশন দলীয় প্রতীকে বিতর্কিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। এই আইনি কাঠামোর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতা বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলে, যার ফলে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হন।

এনসিপি জানায়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় জনগণের প্রত্যাশার আলোকে এনসিপি গঠিত হয়। গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারমূলক কার্যক্রম শুরু করে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়, যারা প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দিলেও মৌলিক সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। সংস্কার ছাড়াই গত ১০ মার্চ ইসি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

এনসিপি ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও সংশ্লিষ্ট আইনের শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত করার ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উদ্দেশ্যে প্রণীত। নির্বাচন সংস্কার কমিশন জেলা পর্যায়ে ১০ শতাংশ ও উপজেলা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কার্যালয় স্থাপনের শর্ত শিথিল করার এবং প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া, ইসির বর্তমান কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২২ সালের বিতর্কিত আইনের অধীনে গঠিত সার্চ কমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে, যা স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব ও নিরপেক্ষতা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য সমালোচিত। এটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

চিঠির শেষে এনসিপি জানায়, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে আইন ও বিধি সংশোধন করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন দলের নিবন্ধন এবং বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের মৌলিক সংস্কার এবং নতুন দল নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা কমপক্ষে ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন
- বিজ্ঞাপন -

সর্বাধিক পাঠিত