বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয় ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিজমের এক সাম্রাজ্য কায়েম করা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সব স্তরেই একটি পরিবর্তনের হাওয়া বয়ে যায়। কথা বলতে শুরু করে গণমাধ্যমও। গ্রেফতার হয় হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন সুবিধাভোগী অনেক সাংবাদিকরা।
এই ধারাবাহিকতা সারাদেশে চললেও ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ উরফে সিআই ফরিদ দীর্ঘদিন যাবত প্রেস ক্লাবে তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে সাবেক সরকারের ভাগা ভাগা মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব কে তার রাজত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগ এর এক সমাবেশে সিআই ফরিদ আন্দোলনকারীদের জামাত-শিবির ও সন্ত্রাসী হিসেবে বক্তব্য দিয়ে বলেন এদের কে প্রতিহত করতে হবে এরা সন্ত্রাসী। এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালও হয়।
কিন্তু ক্ষমতার পালাবদল হলে তার সাঙ্গো পাঙ্গোদের নিয়ে সোজা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সাথে ফটোসেশন করে ফেলেন সিআই ফরিদ গং।
করাপশন ইন মিডিয়ার একটি রিপোর্টে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব কে জুয়ার হাউজি হিসেবে গড়ে তোলার সংবাদ প্রকাশ হয়। সেসময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ছিলেন সিআই ফরিদ।
চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ এর বেশ কজন এমপি ও ব্যবসায়ী তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, চট্টগ্রাম এর সাবেক মেয়র আজম নাছির, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মুহিবল হাসান চৌধুরী নওফেল, রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী, সাবেক ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাবেক এমপি ও ভুমিধস্যু মহিউদ্দিন বাচ্চু ও হাজার কোটি টাকা লোপাট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী এস আলমদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেরিয়েছেন এই সিআই ফরিদ। প্রতিমাসে এই ব্যবসায়ী এবং এমপি কাছ থেকে কোটি টাকা চাদা আদায় করে ভাগ বাটোয়ারার দায়িত্ব ছিলো তার কাধে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবকেও স্বাধীন করতে এক হয় তৃণমুলের সাংবাদিকরা বেশ কজন সাংবাদিকের নেতৃত্ব বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের ব্যানারে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব কে দখলমুক্ত করে তৃনমুলের সাংবাদিকরা কিন্তু নিজের প্রভাব খাটিয়ে তাদের নামে বিভিন্ন প্রথমসারীর গণমাধ্যমে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রনদীত সংবাদ প্রচার করে সিআই ফরিদ গং।
চ্যানেল আই এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান এর দায়িত্বে আছে সিআই ফরিদ এই মাধ্যমকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সরকারি জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বর্তমানে বিএনপির মহানগর ও জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন দোড়ঝাপ করছে সিআই ফরিদ। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে তালা ঝুলানো হলে তার পর থেকে এক প্রকার গা ঢাকা দিয়ে আছে সিআই ফরিদ।
চেরাগী পাহাড়ে ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বেশকজন ছাত্র কে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়া দৈনিক আজাদীর সাবেক রিপোর্টার ঋত্বিক নয়নও সিআই ফরিদ গং এর সদস্য।